শৈত্যপ্রবাহে থাকবে ৪-৫ দিন
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
পৌষের দ্বিতীয়ার্ধে এসে দেশের ছয় বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া শৈত্যপ্রবাহ সংলগ্ন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় শীত বেড়েছে বাংলাদেশে। এই শৈত্যপ্রবাহ চলতে পারে আরও চার থেকে পাঁচ দিন। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকার আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, দেশের শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আগামি চার থেকে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। গতকাল শুক্রবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যোগ করেন হাফিজুর রহমান। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল ইসলাম জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রা নেমে আসার পাশাপাশি ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালসহ শহরের চারটি বাসস্ট্যান্ডে কর্মরত কাউন্টার মাস্টাররা জানান, শীতের কারণে লোকাল বাসে যাত্রী হচ্ছে না। যে কারণে সকালের দিকের বেশ কয়েকটি ট্রিপ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাসচালক বিল্লাল হোসেন জানান, ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় সকাল ও রাতের বেলায় গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগছে। এ দিকে মৌলভীবাজার থেকে আমাদের প্রতিনিধি এস এম উমেদ আলী জানিয়েছেন, শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. হারুন অর রশিদ জানান, গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতের বেলা কুয়াশা কম থাকায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। পাশাপাশি শ্রীমঙ্গলসহ পুরো জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়ার এ অবস্থা আরো কয়েক দিন এভাবে থাকতে পারে। হঠাৎ করে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় শীত ও শীতজনিত বিভিন্ন রোগে শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া সকালে ও রাতের বেলা খড়কুটা জ¦ালিয়ে অনেকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। জেলার হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, জ¦র, সর্দি-কাশি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে তীব্র ঠা-ায় কোথাও কোথাও কোল্ড ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে দেড় বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে ডায়রিয়ায়। শীতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষকে। শীত মৌসুমে প্রতিদিনই মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার দাপট থাকে। শুক্রবারের আবহাওয়ার বুলেটিনেও একই আভাস দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে একটি মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তীব্র (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ২-৩টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।