March 18, 2023, 5:31 pm

সংবাদ শিরোনাম
দীর্ঘ সেশনজটের কবলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ পুলিশ সদস্য গ্রেফতার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দূর্নীতির তেলেছমাতি ৪৫০ কোটি টাকা টেন্ডার অনিয়ম নোম্যান্সল্যান্ডে আবারো কাটা তারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা বিএসএফের,বিজিবির বাঁধা মোংলা ইপিজেডে অগ্নিকাণ্ড এসকেভেটোর দিয়ে সরানো হচ্ছে পুড়া স্তুপ কুতুবদিয়ায় চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ এর বিশেষ অভিযানে জলদস্য প্রধান মোশারফসহ ২ জন আটক ৮ টি অস্ত্র উদ্ধার বেচেঁ থাকাই যেখানে সংগ্রাম শফিকুল সফুরা দম্পতির উলিপুরে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপহার পেল শীতার্ত মানুষ রাজাপুরে জেলেদের মাঝে ছাগল বিতরণ

লালমনিরহাটে কমলা চাষে কোটিপতি একরামুল

আহসান সাকিব হাসান :
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের কমলা ও মাল্টা চাষে অভাবনীয় সাফল্যে প্রায় কোটি টাকার ফল উৎপাদন হয়েছে। বারি মালটা, দার্জিলিং কমলা, চায়না কমলাসহ এসব ফলের ব্যাবসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে শত শত মানুষের। স্বল্পমুল্যে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ ও উচ্চভিলাসী ভিনদেশী এসব ফল হাতের নাগালে কিনতে পারছেন এখানকার মানুষ। জেলার সদর উপজেলার হাড়িভাঙ্গা, মহেন্দ্রনগর, আদিতমারী, হাতিবান্ধা, পাটগ্রামে এসব কমলা ও মাল্টা বাগান তৈরি হয়েছে।

এ বছর জেলায় এসব ফলের ভালো ফলন হওয়ায় কমছে আমদানি নির্ভরতা। জেলার চাহিদা মিটিয়ে রংপুর, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব মাল্টা ও কমলা বিক্রি হচ্ছে। ন্যাযমূল্য ও ভাল বাজার পাওয়ায় সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন কমলা ও মাল্টা বাগান মালিকরা।

নার্সারি ব্যবসায়ী একরামুল হক, গাছের প্রতি প্রেম থেকে নার্সারি ব্যবসা শুরু করে ১৯৯৭ সালে। দীর্ঘ ১৮ বছর নার্সারির ব্যবসার একপর্যায়ে জমি লিজ নিয়ে ফল ফলাদির বাগান করতে শুরু করেন। ২০১৮ সালে লালমনিরহাটের হাড়িভাঙায় ৪ একর যায়গা লিজ নিয়ে দুই হাজারেরো বেশি মাল্টা ও ৫ শত কমলা গাছ লাগান। তিন বছরের মাথায় গাছে ফল আসায় গত বছর ৭০ লাখেরও বেশি টাকার ব্যবসা করেছেন তিনি। সমতল ভূমিতে সফল ফল বাগান করে তাক লাগিয়েছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। এছাড়াও কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারীর বিভিন্ন স্থানে মোট ৫৪ একর ৫০ শতক জায়গা জুড়ে ফল বাগান গড়ে তোলেন। কয়েক প্রজাতির কমলা, মালটা, ড্রাগন সহ বিভিন্ন ফলের বাগানে শূন্য হাতে আজ কোটিপতি বনে গেছেন তিনি। এতে দু শতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

একরামুলের মতো জেলার আদিতমারী, হাতিবান্ধা, পাটগ্রামেও গড়ে উঠেছে মালটা ও কমলা বাগান। দৃষ্টিনন্দন বাগানগুলোতে ফুসরত পেলেই পরিবার সহ ঘুরতে আসছেন অনেকেই। ভিনদেশী উচ্চভিলাসী এসব ফলের সারি সারি গাছ ও গাছের রঙ্গীন ফল দেখে অভিভুত হচ্ছেন তারা।

গোবদ্ধন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুল ইসলাম(৪২) বলেন, পরিবার সহ এসেছি, খুব সুন্দর বাগান। ধারণা করতে পারিনি লালমনিরহাটের মাটিতে এত সুন্দর ফল আসবে। ফলগুলো সুস্বাদু ও মিষ্টি।
লাবিবা আক্তার (১৫) বলেন, কখনো ভাবতেও পাড়িনি চোখের সামনে গাছে কমলা-মালটা দেখতে পাড়বো। গাছে ফলগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। আজ জীবনের সুন্দর একটি মর্হুত কাটালাম।

বাগানগুলোতে কয়েকশো মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি জেলায় মালটা ও কমলার নতুন বাজার তৈরি হয়েছে। খুচরা ও পাইকারীভাবে বেচাকেনায় প্রতিবছর এসব বাগান থেকে কোটি টাকারও বেশি ফল উৎপাদন হচ্ছে। বাজার ভাল হওয়ায় ব্যবসার পরিধিও দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন মৌসুমি এ ব্যবসায়।

মাল্টা বাগান ঘুরতে আসা স্কুল শিক্ষিকা সেতু বেগম জানান, লালমনিরহাটের মত যায়গায় এমন বাগান সত্যি প্রশংসার। আমাদের মনে হচ্ছে ভুটানে বেড়াতে এসেছি। খুবই ভাল লাগছে। এমন বাগান আরও হওয়া দরকার।

বাগান মালিক একরামুল হক বলেন, ছোট থেকেই গাছের প্রতি ভালবাসা ছিলো। প্রথমে নার্সারি ব্যবসা পরে ফল বাগান। এখন অনেকটা লাভবান হচ্ছি। দিন দিন বাগান বাড়ানোর চেস্টা করছি। এতে লাভের পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির কমলা ও মালটার বাগান থেকে ভাল উৎপাদন হয়েছে। বাজারে ফলের চাহিদা থাকায় দিন দিন নতুন বাগান তৈরির উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। ফলে ব্যবসার পরিধিও বাড়ছে। আমরা যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করছি যাতে আরও উদ্যোক্তা তৈরি হয়।

 

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর