December 4, 2023, 6:32 am

সংবাদ শিরোনাম
পুতিন বাড়ালেন সেনাবাহিনীর সংখ্যা ২ দিনের হামলায় মৃত ১৯৩,গাজায় রংপুরে মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ের প্রথম দিনে ৩ আসনে বৈধ ১৯, বাতিল ৫, স্থগিত ৩ রংপুরে চলন্ত বাসের ধাক্কায় নিহত ১, আহত ৫ রংপুর মেডিকেলে ভর্তি সুনামগঞ্জ ৫টি সংসদীয় আসনে আওয়ামীলীগ,জাতীয়পার্টি, স্বতন্ত্রসহ বিভিন্নদলের মোট ২১জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে দূর্বৃত্তদের গুলিতে যুবক খুন আছমা খানম গোপালগঞ্জের টেংরাখোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান সিলেট জেলার শাহপরান (রঃ) এলাকায় চাঞ্চল্যকর সাদেক হত্যা মামলার পলাতক আসামী তানিয়া’কে গ্রেপ্তার গাজীপুর-৫ আসনে আখতারউজ্জামানসহ ৪ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল গোপালগঞ্জ -১ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী সহ মোট ৫জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন

‘এক সপ্তাহের মধ্যে’ ত্রাণ না পেলে মারা যাবে শত শত ইয়েমেনি

‘এক সপ্তাহের মধ্যে’ ত্রাণ না পেলে মারা যাবে শত শত ইয়েমেনি

ডিটেকটিভ আন্তর্জাতিক ডেস্ক  

 

ইয়েমেনে সৌদি জোট আরোপিত অবরোধ তুলে না নিলে সামনের সপ্তাহের মধ্যেই শতশত অসুস্থ ও বয়োজ্যেষ্ঠ ইয়েমেনি মারা যাবেন। জরুরি ভিত্তিতে তাদের সহায়তা প্রয়োজন। স্থানীয় চিকিৎসকদের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। চিকিৎসকরা জানান, রাজধানী সানা’র ফার্মেসিগুলোতে ইতোমধ্যেই ওষুধের তীব্র সংকট দেখা গেছে। ক্যান্সার, ডায়বেটি ও হৃদরোগের চিকিৎসা করা সামনের সপ্তাহে আর সম্ভব হবে না।

সানার আল মুতাওকিল হাসপাতালের ডাক্তার আল-আনসি বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল সরবরাহ বিপজ্জনক হারে হারে কমে এসেছে। আমরা অন্য কোথাও এই ওষুধ বা ইনসুলিন খুঁজে পাবো না। গদ মাসেই লিমফোসাইটিক লিউকোমোয়িয়ায় মৃত্যু হয়েছে দুই বছরের এক শিশুর।

তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব খাবার ও ওষুধ সরবরাহের জন্য অবরোধ শিথিল না করলে অনেক ক্যানসার রোগী মারা যাবেন। এমনটি ডায়বেটিসেও মৃত্যু হতে পারে শত শত রোগীর।’

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকেই ইয়েমেন সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। শনিবার রাজধানী রিয়াদে ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ঘটনায় রোববার অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরব। স্থল, পানি ও আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ায় সীমান্তে আটকা পড়েছে অনেক জরুরি ত্রাণ সামগ্রী।

সৌদি আরবের যুক্তি, ইরান যেন অস্ত্র সরবরাহ করতে না পারে সেজন্যই এই অবরোধ আরোপ করেছে তারা। ইরান অবশ্য এই অভিযাগ অস্বীকার করেছে। এই অবরোধে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাগুলো আটকা পড়েছে অক্সফাম, ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স এর মতো আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো।

সংস্থাগুলো জানায়, সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্তে তারা খুবই শঙ্কিত। তারা সতর্ক করে দেয়, এই অবস্থায় লাখ লাখ মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারে।

অক্সফাম, সেভ দ্য চিলড্রেস, নরওয়ে রিফিউজি কাউন্সিলসহ ১৯টি ত্রাণ সংস্থা এক যুক্ত বিবৃতিতে জানায়, ইয়েমেন মজুদ করা ওষুধ মাত্র এক মাস থাকবে। যদি নতুন ওষুধ না আসে তবে মহামারী আকারে অসুখ ছড়িয়ে পড়বে। পোলিওর মতো রোগও খুবই মারাত্মক হয়ে যাবে। অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শিশুদের জন্য পরিস্থিতি হবে খুবই ভয়াবহ।’

২২টি মানবাধিকার সংস্থার এই জোট আরও জানায়, ৭০ লাখ দুর্ভিক্ষপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র ছয় সপ্তাহের খাবার রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইয়েমেনে মানবেতর পরিস্থিতি খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। খাবার, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ করা না হলে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হবে।’

রবিবার অবরোধ আরোপের পর থেকে খাবার ও জ্বালানির দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। মোহাম্মদ আবু বকর নামে এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, তিনি কয়েকমাস ধরেন বেতন পান না। কিন্তু তাকে হাসপাতালে কেমোথেরাপি নিতে হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমি কীভাবে আমার মেডিকেল বিল দিবো? সবকিছুর দাম এখন বেশি। আমি কি করতে পারি।?

বন্ধু ও পরিবার থেকে এই চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ২ হাজার ডলারেরও বেশি ধার করে ফেলেছেন তিনি। আর কিন্তু অবরোধের কারণে সবকিছ্ইু ব্যর্থ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের মতো আচরণ করছে। তারা মনে করছে এই অবরোধে আমরা ভেঙে পড়বো এবং তাদের কথা মেনে নেবো। আমি হয়তো ততদিন বেঁচে থাকবো না। কিন্তু আমি সৌদি আরবের পরাজয় প্রার্থনা করি।’

গত বৃহস্পতিবার জ্বালানির স্বল্পতার কারণে ইয়েমনের রাজধানীর রাস্তাঘাট একদমই ফাঁকা ছলো। জনপরিবহনের ভাড়াও দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সানার আলজিরাফ এলাকায় একটি কলেরা সেন্টারের স্বাস্থ্যকর্মী আজজুবাযের আব্দুল্লাহ হাসান বলেছেন, ধণী ইয়েমেনিরাও এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘রান্না করার গ্যাসের দাম বেশি। গাড়িতে পেট্রল ভরতে আগে ৬ হাজার লাগলেও এখন ১০ হাজার ইয়েমেনি রিয়াল খরচ হয়।

২০১৫ সালে ইয়েমেন হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। এই ঘটনায় ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদি পালাতে বাধ্য হন। জাতিসংঘের মতে, এই অভিযানে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। ঘরহীন হয়েছেন ৭০ লাখ মানুষ। তাদের অনেকেরই খাবার, স্বাস্থ্য সুবিধা ও বিশুদ্ধ পানি নেই। এর মধ্যে এপ্রিলে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন নয় লাখ ইয়েমেনি।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর