আবু বক্কর সিদ্দিক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের কঞ্চিবাড়ি মৌজার জমির মালিক সাজিয়ে আবাসস্থল ও পিতৃহীন প্রতিবন্ধী মোনারুল ইসলাম নামে ভাতিজাকে জিম্মি করে সম্পত্তির দলিল সম্পাদন করে নিয়েছেন চাচা আঃ মোত্তালেব মিয়া।
জানা যায়, গত ১ জুলাই উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়ে সম্পাদিত দলিলে কঞ্চিবাড়ি মৌজার তফশীল বর্ণিত ২৮ শতক জমির পরিমাণ উল্লেখ্য করা হয়েছে। যার দলিল নং-৫৩৩৬, বহি নং-১ বলে সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র জানিয়েছে। প্রতিবন্ধী মোনারুল ইসলাম কঞ্চিবাড়ি গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর পুত্র। গ্রহীতা মোনারুলের আপন চাচা আঃ মোত্তালেব উক্ত গ্রামের কাচুয়া মামুদের পুত্র। এ ব্যাপারে আঃ মোত্তালেবের অন্যান্য ওয়ারিশরা জানান, মোনারুলের জন্মের আগে তার পিতা মোকছেদ আলীর মৃত্যু হয়। জন্মেরপর মোনারুলের মা মমেনা খাতুন তার পিত্রালয় পার্শ্ববর্তী ছাপড়হাটি ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ গ্রামে বসবাস করতে আয়নাল হক নামে এক ব্যক্তিকে ২য় বিয়ে করে পৈত্রিক জায়গায় বসবাস করছেন। সেখানে আয়নাল-মোমেনা দম্পত্তির ২ ছেলে রয়েছে। তারা আরও জানান, মোনরুল ইসলাম জন্মগতভাবেই বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। বিচারক্ষম, বিবেক না থাকায় সে তার ভাল-মন্দ কিছুই বোঝে না। প্রতিবন্ধী ছেলে মোনারুলকে ফেলে রেখে মা মমেনা বেগম নিজ পিত্রালয়ে গিয়ে অন্যত্রে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ অতঃপর সংসার ও সন্তানের মা হওয়ায় মমেনা মোনারুলের খোঁজ-খবর রাখে না। ফলে চাচা বজলুর রশিদ (এএসআই অব পুলিশ) ও লাল মিয়ার পরিবারে বড় হয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারের চায়ের দোকানে কাজ করে থাকে মোনারুল। তার পিতা মৃত মোকছেদ আলীর নামীয় কোন জায়গা-জমি নেই। আঃ মোত্তালেব মিয়ার নামে দাতা মোনারুলের সাক্ষর বা টিপসহিতে সম্পাদিত দলিলে কঞ্চিবাড়ি মৌজার তফশীল বর্ণিত জমিতে কোনরূপ স্বত্ববান, দখলকার না হওয়ায় মোনরুল ইসলাম ও তার পিতা মৃত মোকছেদ আলী ও মাতা মমেনা খাতুনের নামে কোন দলিলপত্র নেই। দলিলে বর্ণিত গ্রহীতা ধূর্ত আঃ মোত্তালেব মিয়া ২৮ শতক জমির কবলা মূল্য উল্লেখ করেছেন ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মোনারুলের চাচা পুলিশে চাকরীরত বজলুর রশিদের স্ত্রী মেরিনা বেগম জানান, আঃ মোত্তালেব বা তার পরিবার কোন দিন মোনরুলের খোঁজ-খবর নেয়নি। উক্ত দলিলে তফশীল বর্ণিত জমি তাদের দখলে থাকায় শত্রæতামূলক এ জমির দলিল দেখিয়ে আঃ মোত্তালেব বড় ধরণের দ্ব›দ্ব সৃষ্টির অপতৎপরতা চালাচ্ছে। মোনরুলের পরনে পরিধেয় কাপড়-চোপড় ছাড়া তার থাকার কোন নির্দিষ্ট স্থান নেই। সে টাকা-পয়সা বা সম্পদ-সম্পত্তি কিছুই বোঝে না। এমনকি, ১’শ টাকা তো দূরের কথা, খুচরা ৫০ টাকারও হিসাব বোঝে না মোনারুল। সে যেখানে পায়-সেখানেই থাকে। অথচ, তাকে উক্ত জমির বিনিময়ে যে পরিমাণ টাকা দেখানো হয়েছে সে বিষয়ে নানান প্রশ্ন করেন মেরিনা বেগম। এ ব্যাপারে মোবাইলফোনে কথা হলে আঃ মোত্তালেব মিয়া মোনারুল ইসলামের প্রতিবন্ধীতার কথা অস্বীকার করে বলেন, দলিলে উল্লিখিত ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা মোনারুল ইসলামকে বুঝে দেয়া হয়েছে। এরপর অন্যান্য প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে কল করে জানানোর কথা বলে আর ফোন কল রিসিভ করেন নি।স্থানীয়রা জানান, বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী মোনারুল ইসলাম স্বার্থান্ধ চাচা আঃ মোত্তালেব মিয়ার প্রতারণার স্বীকার হয়েছে। এব্যাপারে প্রশাসনের উর্দ্ধোতন বিভাগের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২২ জুলাই ২০২০/ইকবাল