আনু আনোয়ার,পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কাউয়ারচরে বৃহস্পতিবার রাতে মাছের ঘের দখলের চেষ্টা ও মালিকসহ ৩ জনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় স্থানীয় এমপি মুহিব এর পিএ তরিকুলসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় শাহিন (৩৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে ।
জানা গেছে,বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের চাপলি এলাকার কাউয়ারচরে মাছের ঘের দখল করতে গিয়ে ঘের মালিকের তিন পুত্রকে কুপিয়ে জখম করে স্থানীয় এমপি অধ্যক্ষ মো: মহিব্বুর রহমান’র পিএ তরিকুলের ক্যাডাররা। এতে গুরুতর আহত হয় ঘের মালিক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবুর রহমানের তিন পুত্র নুর বাহাদুর, তার দুই ভাই সোহেল ও জুয়েল। আহতদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আহত নুর বাহাদুরের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ওই রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রেফার করা হয়। এ ঘটনায় আহতদের বাবা মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতে মহিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় এমপি’র ব্যক্তিগত সহকারী মোঃ তরিকুল ইসলামকে। এছাড়াও ঘটনার সময় হামলায় তরিকুলের সাথে অংশ নেয়া আরও ১৯ জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে মামলা দায়েরের পরপরই মহিপুর থানা পুলিশ সাড়াশি অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত শাহিনকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান মহিপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাহবুবুল আলম।
পুলিশ ও আহতরা জানায়, উপজেলার ধূলাসার ইউনিয়নের কাউয়ার চর এলাকায় নুর বাহাদুরের পিতা মাহাবুবুর রহমান হাওলাদার ৩০ একর জমির উপর তৈরীকৃত ঘেরে মাছ ও কাঁকড়া চাষ করে আসছিল। ক’দিন পূর্বে স্থানীয় সাংসদের পিএ তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তার বাহিনী মাছ ও কাঁকড়া লুট করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনা স্থানীয়ভাবে মিমাংসা হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ঘেরে শ্রমিক নিয়ে পানি সেচের কাজ করছিল নুর বাহাদুর ও তার ভাইয়েরা। সন্ধ্যার পর তরিকুলের নেতৃত্বে স্থানীয় মিন্টু ও ইলিয়াসসহ তার ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘেরে উপস্থিত হয়ে কাজ করার জন্য নিষেধ করে। নুর বাহাদুর ও তার লোকজন এর প্রতিবাদ করায় তাদের উপর হামলা চালায় তরিকুলের ক্যাডাররা। এ সময় নুরবাহাদুর, সোহেল ও জুয়েলকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এসময় ঘের মালিক মাহাবুবুর রহমান ও তার ছোট ভাই হেলাল এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে তারা।
এ বিষয়ে এমপি’র পিএ তরিকুল ইসলাম বলেন, ’আমি বৃহস্পতিবার ঢাকায় ছিলাম। ঘটনা শুনেছি, যারা ঘের মালিক ও যারা দখল করতে গিয়ে হামলা চালিয়েছে সবাই আওয়ামী লীগ। এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই।’
মহিপুর থানার ওসি তদন্ত মো. মাহাবুবুল আলম জানান, ঘের দখলকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘের মালিক তার ভাই ও লোকজন নিয়ে পানির সেচের কাজ করছিল। এ সময় এমপি’র পিএ’র নেতৃত্বে তাদের কাজ করতে নিষেধ করা হয়। কাজ বন্ধ না করায় তাদের উপর হামলা করা হয়। এতে তিনজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে নুর বাহাদুরকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০/ইকবাল