দেশ গড়তে সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: তথ্যমন্ত্রী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ‘সাংবাদিকতার নীতিমালা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ও তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য এ কর্মশালা আয়োজন করে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে অনলাইনের পাশাপাশি দৈনিক ও টেলিভিশনের অনলাইন রয়েছে। অনলাইনকে নিবন্ধনের আওতায় আনছি। বিভিন্ন সংস্থা অনেক অনলাইন সম্পর্কে প্রতিবেদনও দিয়েছে। অনলাইনগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, যে ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্র চাই তা গঠনে সবার অংশগ্রহণ জরুরি। বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নত জাতি গঠন সম্ভব না। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত জাতি গড়তে হবে। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন উন্নত রাষ্ট্র থেকে এগিয়ে। এ বন্ধন অটুট রাখতে হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও প্রধান বাণিজ্যনগরী। দেশের স্বাধীকার, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের আন্দোলনে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্র গঠন, নতুন প্রজন্মের মনন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনুসন্ধানী রিপোর্ট অনেক ক্ষেত্রে আগের চেয়ে কমে গেছে। এ ধরনের রিপোর্ট সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। কর্মশালা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সাংবাদিক কারা হবেন তা ঠিক করতে হবে। এটি ঠিক না করলে পেশার মর্যাদা ধরে রাখা যাবে না। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মনজুরুল আহসান বুলবুল। নঈম নিজাম বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদার আসন ধরে রাখতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। সাহসের সঙ্গে গণমানুষের কথা বলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার পক্ষে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকতা মূর্খ লোকের পেশা নয়। অতীতকে ধারণ করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে হবে। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের অর্ডিন্যান্সমূলে গঠনের দিনটিকে গণমাধ্যম দিবস ঘোষণার দাবি জানান। এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমদ। গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবাদিক ছাড়া জাতি বাঁচবে না। বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কিছু নেই। এটা সরকারি কর্মকর্তাদের পছন্দ। চার বছরে প্রেস কাউন্সিলে কিছুটা দৃশ্যমান কাজ করতে পেরেছি। তিনি বলেন, অনলাইনে অবাধ তথ্য সরবরাহের কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা হচ্ছে। নানা বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে। দেশে ৮ হাজার অনলাইন পোর্টাল রয়েছে। সাংবাদিকদের নামে চাঁদাবাজি, অনৈতিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা থেকে পরিত্রাণ চাই। এটা প্রকৃত সাংবাদিকদের করতে হবে। সাংবাদিক নেতৃত্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনৈতিকতার লাগাম টানতে হবে। সাংবাদিকদের অধিকারের প্রশ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন বা যুগোপযোগী করার জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকতাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে চেষ্টা করছি। প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।