March 28, 2024, 2:48 pm

সংবাদ শিরোনাম
র‍্যাব-৫, এর অভিযানে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী দূর্গম চর হতে ১১০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার’ চিলমারীতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রংপুরে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে কতৃপক্ষের ব্যাপক অভিজান পীরগঞ্জের ১৫টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ, মামলার রায় পেয়েও ১৭ মাস ধরে অবরুদ্ধ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলে কাটা পড়ে কিশোরীর মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান ভোলা বোরহানউদ্দিনে নানা আয়োজনে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হলো নবাবগঞ্জে মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সিলেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছে জমিয়ত সুন্দরগঞ্জে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপণ

ঝিনাইদহের আবদুল্লাহ আল বাঙ্গালী যেভাবে জঙ্গিবাদে জড়ালো

ঝিনাইদহের আবদুল্লাহ আল বাঙ্গালী যেভাবে জঙ্গিবাদে জড়ালো

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

নরসিংদীর শেখেরচরে ভগীরথপুরে অপারেশন গর্ডিয়ান নট পরিচালনায় নিহত জঙ্গি আবু আবদুল্লাহ আল বাঙ্গালীর আসল পরিচয় কী? কীভাবে সে জঙ্গিবাদে জড়ালো? কীভাবেই বা আরেক দুদধর্ষ নারী জঙ্গি আকলিমা আকতার মনিকে বিয়ে করলো? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এলো আবদুল্লাহর প্রকৃত নাম গোলাম মোস্তফা। তার ডাক নাম রুবেল। তার বাড়ি ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বেজপাড়া গ্রামে। সে যশোর এমএম কলেজে হিসাব বিঞ্জান বিষয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। এ ছাড়া বেজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, বেজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে,কালীগঞ্জ মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ২০১৪ সালে যশোর যশোর এমএম কলেজে অনার্স হিসাব বিঞ্জান বিষয়ে ভর্তি হয়। ২০১৫ সালের শেষদিকে জঙ্গি হাদিসুর রহমান সাগরের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায় আবদুল্লাহ। তখন থেকে নিজের প্রকৃত নাম আড়াল করে সাংগঠনিক ছদ্মনাম আবদুল্লাহ বাঙ্গালী হিসেবে পরিচিতি পায়। নিহত জঙ্গি আবু আবদুল্লাহ আল বাঙ্গালী নিহত হবার পর গত শুক্রবার কালীগঞ্জ থানা পুলিশ মা মর্জিনা বেগম,বাবা আবদুল মান্নান ও বোন কে থানায় ডেকে ব্যাপক জিঙ্গাসাবাদ করেছে। কিন্তু আবদুল্লার নামে কালীগঞ্জ থানায় কোন মামলা নেই। আবদুল্লাহরা ৩ ভাই বোন। সে সবার বড় এবং ২ বোন তার ছোট। ২০১৫ সাল থেকে ঠিকমত সে বাড়িতে আসতো না। মোস্তফার বয়স যখন দেড় বছর তখন তার পিতা রবিউল ইসলাম ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারাযান। জঙ্গি আবু আবদুল্লাহ আল বাঙ্গালী আহলে হাদিসের মতানুসারী ছিল। ৮-৯ মাস আগে থেকে তার চালচলন ছিল অস্বাভাবিক। গত মঙ্গলবার শেখেরচরে অভিযানে সস্ত্রীক নিহত হওয়ার আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আবদুল্লাহর গ্রেফতারের তথ্য পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ মাসখানেক আগে গ্রামে মা মর্জিনা বেগমকে ফোন করেছিল সে। মাকে সে বলেছিল, মাসখানেক তাকে ফোনে পাওয়া যাবে না। এরপর পরিবারের কারও সঙ্গে তার কোনো ধরনের যোগাযোগ ছিল না। শেখেরচরে অভিযানের পর গত বুধবার ছেলের নিহত হওয়ার খবর জানতে পারেন তার মা। কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী বলেন, নরসিংদীতে অভিযানে নিহত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। প্রায় ৫ মাস আগে আরেক জঙ্গি নারীকে বিয়ে করে সে। বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে সে জানিয়েছিল। নরসিংদীর অপারেশনের পর আবদুল্লাহর মা, পিতা ও বোনদের ডেকে এনে তার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের শেষদিকে জেএমবির নেতা হাদিসুর রহমান সাগরের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের পথে পা বাড়ায় আবদুল্লাহ। সাগর একসময় জেএমবির ঝিনাইদহ ও খুলনা অঞ্চলের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা ছিল। ২০১৬ সালের আগস্টে গুলশানে হলি আর্টিসানে হামলার আগে নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী ঝিনাইদহে গিয়ে সাগরের আস্তানায় অবস্থান করে। চলতি বছরের মার্চে বগুড়া থেকে সাগরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের পর নব্য জেএমবির কার্যক্রমে আরও মনোযোগী হয় আবদুল্লাহ। সংগঠনের একাধিক সাইটের অ্যাডমিন হিসেবে সে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। মূলত নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার প্রধান ছিল আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মগবাজার ও গাজীপুর থেকে চার নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তারা হলো- ইসতিনা আক্তার ঐশী, আকলিমা আখতার মনি, ইশরাত জাহান মৌসুমী ওরফে মৌ ও খাদিজা পারভীন মেঘলা। ঐশী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ছিল। অপর তিনজন মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে জামিনে বেরিয়ে আবারও জঙ্গিবাদী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে আকলিমা, মৌ ও মেঘলা। তারা মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করে ইন্টার্ন করার জন্য কয়েকটি প্রতিষ্টানে জীবন-বৃত্তান্ত জমা দেয়। এরইমধ্যে আকলিমা হঠাৎ আরেক জঙ্গি আবদুল্লাহকে বিয়ে করে। আবদুল্লাহর সঙ্গে বিয়ের পর আকলিমা গাজীপুরে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত। তাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বুরুঙ্গি এলাকায়। বাবার নাম শহিদুল ইসলাম। তবে আবদুল্লাহ একবার তার স্ত্রীকে নিয়ে যশোরে গিয়েছিল। ৩ অক্টোবর আকলিমাকে নিয়ে যশোর ত্যাগ করে সে।সূত্র জানায়, র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর জেলখানায় থাকার সময় আকলিমা, মৌ ও মেঘলা নানা ধরনের শলাপরামর্শ করতে থাকে। জামিনে বেরিয়ে কীভাবে আবার সংগঠনের জন্য কাজ করবে, সেই ফন্দি আঁটে তারা। এরপর জামিনে বের হওয়ার পর শুরু হয় তাদের জঙ্গিবাদের দ্বিতীয় পর্ব। এমনকি জেল খাটার পরও তাদের মধ্যে পরিবর্তন না আসায় এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। জঙ্গিবাদে জড়াতে রাজি না হওয়ায় মৌ-এর সঙ্গে তার ছোট ভাইয়ের ঝগড়া পর্যন্ত হয়েছিল বলে সূত্র নিশ্চিত করে।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর